ফাইনালের সেই ‘সেভ’ মার্তিনেজের স্মৃতিতে থাকবে আজীবন
বিশ্বকাপ ফাইনালের ওই মুহূর্তটির কথা কারও পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, কোলো মুয়ানি কিংবা আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স দলের কারও পক্ষে তো নয়ই। ওই মুহূর্তটি আর্জেন্টাইন কিংবা ফরাসি সমর্থকদের হৃদয়ে দুই রকমের আবেগের ঢেউ তোলে। আর্জেন্টিনার সমর্থকদের হৃৎস্পন্দন হয়তো মুহূর্তের জন্য থেমে যায়, ফরাসি সমর্থকেরা আক্ষেপে পোড়েন। মার্তিনেজের কাছে হয়তো মুহূর্তটি স্বপ্ন মনে হয়, ফ্রান্স স্ট্রাইকার মুয়ানির হয়তো বুক ফেটে কান্না আসে।
গত বছরের ডিসেম্বরে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালটা অনেকের চোখেই হয়তো সর্বকালের সেরা বিশ্বকাপ ফাইনাল। যদিও ম্যাচের ৮১ মিনিট পর্যন্ত সেটিকে খুবই একপেশে এক ম্যাচ মনে হচ্ছিল। আর্জেন্টিনা খুব দ্রুতই ২-০ গোলে লিড নিয়ে ফেলায় কেউ ভাবতে পারেননি ফ্রান্স ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচটা এমন শ্বাসরুদ্ধকর করে তুলবে। কিলিয়ান এমবাপ্পের দুই গোলে স্কোরলাইন ২-২ হয়ে যাওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে মঞ্চস্থ হয়েছে আরও নাটক। মেসি গোল করে ৩-২ করেছেন, এমবাপ্পে হ্যাটট্রিক করে ইতিহাস গড়ে ৩-৩ করে ফেলেছেন। কিন্তু সবচেয়ে বড় নাটকটি বোধ হয় হয়েছে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে, ১২৩ মিনিটে।
রোমাঞ্চকর ফাইনালের স্কোরলাইন তখন ৩-৩। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের হাড্ডাহাড্ডি ও শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে বিশ্বকাপ ফাইনাল তখন টাইব্রেকারের অপেক্ষায়। ঠিক ওই সময় নিকোলাস ওতামেন্দির ভুলে হঠাৎই আর্জেন্টাইন বক্সের সামনে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক মার্তিনেজকে একা পেয়ে যান মুয়ানি। মার্তিনেজের পাশ দিয়ে বল জালে ঠেলে দিলেই ফ্রান্স জিতে যাবে, এমন পরিস্থিতিতে মুয়ানির শট অবিশ্বাস্যভাবে বাঁ পা বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন মার্তিনেজ। সেটিকে প্রায় সবাই বলছেন কাতার বিশ্বকাপের সেরা সেভ, কেউ কেউ বলছেন বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই সেরা সেভ। মুয়ানি গোলটা করেই ফেলেছেন ভেবে ডাগআউট থেকে ফ্রান্স দলের সদস্যরা উত্তেজনায় মাঠেই ঢুকে পড়েছিলেন। কিন্তু তাদের হতাশই হতে হয়। এর পরের ইতিহাস আর্জেন্টিনা আর মার্তিনেজের পক্ষেই। টাইব্রেকারে একটি শট ঠেকিয়ে মার্তিনেজ হয়ে যান বিশ্বকাপ ফাইনালের হিরো।