রিয়ালের হার ছাপিয়ে ভিনির সঙ্গে বর্ণবাদী আচরণ, তাঁরই লাল কার্ড দেখা

 

sportsnewsbd.com
ভিনিসিয়ুসকে শান্ত করার চেষ্টায় ভ্যালেন্সিয়া অধিনায়ক হোসে গায়া ও ডিফেন্ডার চেঙ্ক ওজকাকারছবি : রয়টার্স

ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে রক্ষা করার দাবি তুলেছিলেন থিবো কোর্তায়া। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। একের পর এক বাজে ট্যাকল করা, প্ররোচিত করে হলুদ বা লাল কার্ড খাওয়ানো কিংবা বর্ণবাদী আক্রমণ—কী হচ্ছে না ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে!

সাম্প্রতিক কিছু পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ বলছে, এ মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে খেলা ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হয়েছেন ভিনিসিয়ুস। এটা না হয় মাঠের ব্যাপার। প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ তাঁকেই সামলাতে হবে। কিন্তু গ্যালারি থেকে ধেয়ে আসা বর্ণবাদী আচরণের কী হবে?  

প্রতিপক্ষের মাঠে ভিনিসিয়ুসের খেলতে নামা আর বর্ণবাদের শিকার হওয়া যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ভিনিসিয়ুসের জন্য। গত রাতে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ঘটনাবহুল ম্যাচেও বর্ণবাদী আচরণ আর বাজে ট্যাকলের শিকার হয়েছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার, প্রতিবাদ করতে গিয়ে দেখেছেন লাল কার্ড। ম্যাচটা রিয়াল ১-০ ব্যবধানে হেরেছে, কিন্তু ফল ছাপিয়ে আলোচনায় ভিনির নাজেহাল হওয়ার ঘটনা।

ম্যাচে একাধিকবার দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভিনিসিয়ুসের উদ্দেশে কিছু একটা বলতে থাকেন এক দর্শক। সেদিকে তেড়ে গিয়ে জবাব দেন থাকেন ভিনি। তাতে খেলা বন্ধ থাকে অনেকটা সময়। সব মিলিয়ে ম্যাচের স্থায়িত্ব ছিল ১০৭ মিনিট!

একপর্যায়ে রেফারি রিকার্দো দি বুরগোস বর্ণবাদবিরোধী ‘প্রোটোকল’ সক্রিয় করতে বাধ্য হন। খেলা বন্ধ থাকার সময় তিনি দর্শকদের এ–ই বলে হুমকিও দেন যে আর কেউ বর্ণবাদী মন্তব্য করলে ম্যাচ স্থগিত করা হবে। বর্ণবাদী আক্রমণে অতিষ্ঠ ভিনিসিয়ুসও খেলা চালিয়ে যেতে চাননি। পরে কোচ কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত পাল্টে মাঠে থেকে যান তিনি।

প্রতিপক্ষের মাঠে বারবার বর্ণবাদের শিকার হওয়াকে এখন স্বাভাবিক ব্যাপার মনে হয় ভিনিসিয়ুসের কাছে। এর জন্য স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনকে দায়ী করেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। ম্যাচ শেষে ইনস্টাগ্রামে ২২ বছর বয়সী তারকা লিখেছেন, ‘এটা প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার নয়। লা লিগায় বর্ণবাদ স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোদ কর্তৃপক্ষ ও স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন এটা মনে করে এবং সমর্থকদের দলগুলো সাহস জোগায়।’

ভিনি আরও লিখেছেন, ‘চ্যাম্পিয়নশিপ আগে রোনালদিনিও, রোনালদো, ক্রিস্টিয়ানো, মেসিদের দখলে ছিল, এখন এটা বর্ণবাদীদের দখলে। একটা সুন্দর জাতি (স্প্যানিশ) আমাকে স্বাগত জানিয়েছিল। যে জাতিকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু (কিছু মানুষ) স্পেনকে বর্ণবাদী দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। যেসব স্প্যানিশ আমার সঙ্গে একমত হবেন না, তাঁদের জন্য আমি দুঃখিত। তবে বলতে বাধ্য হচ্ছি, স্পেন আজ ব্রাজিলিয়ানদের কাছে বর্ণবাদী দেশ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রতি সপ্তাহেই এমনটা ঘটতে থাকলে আমি একা প্রতিহত করতে পারব না।’

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url